হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) জন্মের পূর্বে আরবের ইহুদীরা অন্য লোকদের এই বলে হুমকি দিত যে, শেষ নবী তাদের মধ্য থেকে জন্মগ্রহণ করবেন, তারপর ইহুদীরা সেই নবীকে সাথে নিয়ে সবাই কে কচুকাটা করবে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পাঠালেন কুরাইশ বংশে, যার কারণে আরবের অধিকাংশ ইহুদী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে মেনে নেয়নি। ঠিক বর্তমানে ইরান ইরাক, লেবানন, আফগানিস্তানের শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন সব সময় ইমাম মাহদীর আগমন নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করছে, অথচ ইমাম মাহদীকে হত্যা করতে তারাই ৭০ হাজার সৈন্য পাঠাবে। সহিহ হাদিস থেকে আমরা জানতে পারি যে, ইমাম মাহদী (আঃ) এর আত্নপ্রকাশের পূর্বে সিরিয়াতে সুফিয়ানীর আগমন হবে। কিন্তু কে হবে সুফিয়ানী? আর কিভাবে আমরা তাকে চিনতে পারব?  মূলত প্রত্যেক সচেতন মানুষের জন্য সুফিয়ানীর পরিচয় জানা অত্যাবশ্যক। বর্তমানে কিছু ব্যাক্তি, যারা সুফিয়ানী সম্পর্কে কিছুটা জানে তারা মনে করে সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্টই হল সুফিয়ানী। কিন্তু এই ধারণাটি ভুল, আসল কথা হল ইমাম মাহদীর শত্রু সুফিয়ানী বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের একই বংশ অর্থাৎ বানু কাল্ব গোত্রের হবেন এবং এই গোত্রের লোকজনই সুফিয়ানীর অনুসারী হবে। কিন্তু সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ সুফিয়ানী নয়।

 ** আল আকামা ইবনে মাসুদ বলেন, রাসুল (সাঃ)  আমাদেরকে বলেছেন,
“আমি তোমাদেরকে সাতটি মারাত্মক ফিতনার ব্যাপারে সাবধান করছি যা আমার পরে আসবে,
 ১,প্রথম ফিতনা যা মদিনা থেকে আসবে,
 ২,দ্বিতীয় ফিতনা যা মক্কা থেকে আসবে,
৩,তৃতীয় ফিতনা ইয়েমেন থেকে আসবে,
 ৪,চতুর্থ ফিতনা বৃহত্তর সিরিয়া থেকে আসবে,(২০১১সালের পর থেকেই এই ফিতনা শুরু হয়েছিল)

 ৫, পঞ্চম ফিতনা যা পূর্বদিক (ইরাক) থেকে আসবে,
(কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতির Islamic state এর আভ্যন্তরীণ দুই গ্রুপের মধ্যে সিরিয়ার হোমস শহরে একটি ভয়াবহ যুদ্ধ হবে)

৬, ষষ্ঠ ফিতনা যা পশ্চিম দিক(মিশর) থেকে আসবে,
(হলুদ পতাকাবাহী তাওয়ারেগ জাতির কথা বলা হয়েছে, যাদের আবির্ভাব হবে ২০২০/২০২১ সালে)

 ৭,সপ্তম ফিতনা যা সিরিয়ার পাহাড়ি উপত্যাকা থেকে আসবে যা হল সুফিয়ানি (সিরিয়ায় বনু কাল্ব গোত্রের অত্যাচারী পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট শাসক)”।
বর্ননাকারী ইবনে মাসুদ বলেন, ‘আমাদের ভিতরে অনেকে প্রথমগুলো দেখেছি আর বাকিগুলো আমাদের পরবর্তী পজন্ম দেখবে’।

(মুসতাদরাকে হাকিম, আল ফিতান)


কে এই সুফিয়ানী? কি তার পরিচয়?
--------------------------------------------------

মূলত সুফিয়ানী হবেন দুইজন। প্রথমজন হবেন বংশগত দিক দিয়ে বানু কাল্ব গোত্রের লোক অর্থাৎ সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বংশের থেকেই এবং সে সাড়ে তিন বছর ক্ষমতায় থাকবে। এই সময়ে সে সিরিয়াতে অবস্থানকারী কালো পতাকাবাহী আসবাব জাতি (Islamic state), হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতি (Tuareg) এবং ফোরাত নদীতে ভেসে উঠা স্বর্নের পাহাড়কে কেন্দ্র করে তুরস্ক ও আমরিকার সাথে যুদ্ধ করবে।

 আর দ্বিতীয় জন হবেন উমাইয়া গোত্রের আবু সুফিয়ানের বংশের মধ্য থেকে।অর্থাৎ আব্দুল্লাহ ইবনে আজহার ইবনে খালিদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া ইবনে আবু সুফিয়ানের বংশের।দ্বিতীয় সুফিয়ানী রক্ত সম্পর্কের দিক থেকে প্রথম সুফিয়ানীর বোনের ছেলে অর্থাৎ ভাগিনা হবে। আর দ্বিতীয় সুফিয়ানীকেই হাদীসের ভাষায় পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট লোক বলা হয়েছে। তবে এই দুইজন আত্নপ্রকাশের পুর্বথেকেই তাদের আনুসারীরা আগে থেকেই সিরিয়ার ক্ষমতায় থাকবে।

“শুরুর দিকে তারা(সুফিয়ানী) ন্যায়পরায়ণ শাসক হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে, পরে যখন শক্তি ও ক্ষমতা পাকাপোক্ত হয়ে যাবে, তারা অত্যাচার-অবিচার ও অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়বে”।

(ফয়জুল কদির, খণ্ড ৪, পৃষ্ঠা ১২৮)

অর্থাৎ প্রথমে তাদেরকে মুসলমানদের মাঝে মহান নেতা বা হিরো হিসাবে উপস্থাপন করা হবে, কিন্তু পরে তাদের আসল রূপ প্রকাশ হয়ে পড়বে এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে।

মুসলিম বিশ্বের জন্য উদ্বিগ্নের বিষয় হল, ১৯৬৬ সালে সামরিক ক্যু এর মাধ্যমে সিরিয়ার ক্ষমতা দখলকারী হাফিজ আল আসাদ এবং তার পরিবারও "কালব্যিয়া" বা "কাল্ব" গোত্রের। তারা শিয়াদের যে শাখার অনুসারী অর্থাৎ “নুসাইরিয়া”/ “আলাভি”/ “আলাওয়াতি” রাও “কালব্যিয়া" বা "কাল্ব" গোত্রের। বর্তমানে বাশার আল আসাদদের অনুগত ও অনুসারী প্রশাসনিক ও সামরিক বাহিনীর বেশির ভাগই “নুসাইরিয়া”/ “আলাভি” তথা "কালব্যিয়া" বা “কাল্ব" গোত্রের। ইসরাইল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে উচ্চকণ্ঠের কারণে বেশির ভাগ মুসলিমরা এই পরিবারকে হিরো মনে করে। আজ ক্ষমতায় টিকে থাকতে গিয়ে তাদের আসল রূপ প্রকাশ পেয়েছে। আজ তারা “আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাআ”দের সাথে সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত। প্রথম শাসক ছিল হাফিজ আল আসাদ, সে ৩০ বছর সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ছিল। তার মৃত্যুর পর তার ছেলে দ্বিতীয় শাসক হয় বাশার আল আসাদ। কিন্তু আরবদের বিভিন্ন পশ্চিমা দালাল মিডিয়াতে নিজের "কালব্যিয়া" বা "কাল্ব" গোত্রের পরিচয়কে গোপন করে কুরাইশ বংশের পরিচয়কে বাশার আল আসাদ বার বার সামনে আনছে (হাদিসে এসেছে কালব গোত্রের কুরায়েশী ব্যক্তি) এবং রাসুল (সাঃ) এর কুরাইশ বংশের ধোঁয়া তুলে বর্তমান মুসলিম জাহানের অপেক্ষাকৃত উদাসীন, শেষ জামানার আলামত সম্পর্কে অজ্ঞ ও দুর্বল ঈমানের মুসলমানদের সহজেই পথ ভ্রষ্ট করছে।


সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ কেন সুফিয়ানী নয়?
-------------------------------------------------------------------

আমাদের অনেক ভাই কিছু কিছু কারনে মনে করেন সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্টই হল হাদীসে উল্লেখিত সুফিয়ানী। কারন হাদিসের দুই একটি ভবিষ্যৎবাণীর সাথে তার মিল রয়েছে। যেমন, সুফিয়ানী নামক ব্যাক্তি বংশগত দিক থেকে বানু কাল্ব গোত্রের হবে, আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বংশের দিক থেকে আরবের বানু কাল্ব গোত্রের লোক। আবার সুফিয়ানীর উত্থানের সময় বয়স হবে ৪০ এর কম, আর বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের ও প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় এরকমই বয়স এরকমই ছিল, কিন্তু সুফিয়ানী অধিকাংশ আলামতের সাথে বাশার আল আসাদের কোন মিল নেই। যেমনঃ


১,সুফিয়ানী উত্থান হবে হঠাৎ করে। অথচ বাশার আল আসাদ তার পিতার মৃত্যুর পর স্বাভাবিক ভাবেই প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন।

২,সুফিয়ানীর উত্থানের পূর্বে সিরিয়াতে কালো পতাকাবাহী আসবাব জাতি (Islamic state) এবং হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতির(Tuareg) মধ্যে যুদ্ধ চলতে থাকবে। অথচ বাশার আল আসাদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার ২০০০ সালের পূর্বে সিরিয়াতে এরকম কোন বাহিনীর অস্তিত্ব ছিলনা।

৩, সুফিয়ানীর উত্থানের পূর্বে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক (Damascus) শহরের আরম নামক জনপদে ও বনি উমাইয়া মসজিদের নিকটে একটি ভয়াবহ ভূমিকম্প হবে। অথচ বাশার আল আসাদের বেলায় এরকম কিছু হয়নি।

৪,সুফিয়ানী উত্থানের পূর্বে মিশরে অবশ্যই হলুদ পতাকাবাহী তাওয়ারেগ জাতি (Tuareg)  দের উত্থান হবে। কিন্তু বাশার আল আসাদের পূর্বে মিশরে এরকম কিছু দেখা যায়নি।

৫, সুফিয়ানীর উত্থানের পূর্বে সিরিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম শহর হোমস শহরে কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতির (Islamic state) উপর ১৮ মাস অবরোধ থাকবে। অথচ হাদীসের এই ভবিষ্যৎবাণী এখানো বাস্তবায়িত হয়নি।

৬, সুফিয়ানী একটি লাল উটের উপর (ট্যাংকের) থাকা অবস্থায় ৭ জন সহযোগী সহ আভির্বাব হবে। কিন্তু বাশার আল আসাদের বেলায় এরকম কিছু হয়নি।

৭, সুফিয়ানীর উত্থানের পূর্বে দামেস্ক শহরের নিকটে তুরস্ক ও রোম (আমরিকা) এবং খাসাফ সম্প্রদায়ের লোকজন জড়ো হবে। কিন্তু বাশার আল আসাদের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পূর্বে কেউ জড়ো হয়নি।


কবে সুফিয়ানীর উত্থান হবে? ২০২২ সালে (ইনশাল্লাহ)
-------------------------------------------------------------------

** হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, "সুফিয়ানীর উত্থান অবশ্যই হবে, তিনি রজব মাসে আত্নপ্রকাশ করবেন "।

(কিতাবুল গাইবাহ, অধ্যায় নং ১৮, পৃষ্ঠা ৪৪০, বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২, পৃষ্ঠা ২৫০, মুজ'আম আল হাদিস ইমাম আল মাহদী, খন্ড ৩, ৪৬৩)


**হযরত জাফর সাদিক (রহঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, "সুফিয়ানী এবং (মনসুর) ইয়ামানীর উত্থান হবে প্রতিযোগিতার দুটি ঘোড়ার মত"।

(কিতাবুল গাইবাহ, ১৮ নং অধ্যায়, পৃষ্ঠা নং ৪৪৫, মুজ'য়াম আল হাদীস ইমাম আল মাহদী, খন্ড ৩,পৃষ্ঠা ৪৭৮, বিহারুল আনোয়ার, খন্ড ৫২, পৃষ্ঠা ২৭৫, ২৫৩)

অর্থাৎ এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, খোরাসানের বাহিনীর নেতা মনসুর ইয়ামানী ও সুফিয়ানীর উত্থান একই সময়ে হবে। এখন প্রশ্ন হল খোরাসানের বাহিনী কবে আবির্ভাব হবে?


** হযরত ইবনুল হানাফিয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, খোরাসান থেকে কালো পতাকাবাহী দল এবং শুয়াইব ইবনে সালেহ ও মাহদীর আত্নপ্রকাশ আর মাহদীর হাতে ক্ষমতা আসা বাহাত্তর মাসের (৬ বছরের) মধ্যেই সংঘটিত হবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮০৪ ]

এই তিনটি হাদীসের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম, ইমাম মাহদীর ৬ বছর পূর্বে রজব মাসে (আরবি মাসের ৭ম মাস) সিরিয়ার ওয়াদিউল ইয়াবেস (Darra শহর) থেকে উত্থান হবে।

কিন্তু আমরা কিভাবে বুঝব ২০২২ সালের রজব মাস (ফেব্রুয়ারী) মাসে সুফিয়ানীর উত্থান হবে?
কারন ইমাম মাহদীর আগমন হবে ২০২৮ সালে (ইনশাল্লাহ) বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
https://islamicastrolgy.blogspot.com/2018/02/blog-post.html?m=1

তবে এর ব্যতিক্রম হতে পারে, এটা আমার ব্যক্তিগত গবেষণা মাত্র, এটা ভুল কিংবা সঠিক দুটোই হতে পারে। কারন সুনির্দিষ্ট সময় কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন।

সুফিয়ানীর শারীরিক আকৃতি ও তাকে চিনার উপায়ঃ
----------------------------------------------------------------

১, তার জন্মের সময় আকাশে সিংঙ্গার আকৃতির ন্যায় একটি তারকা উদিত হবে। (১৯৮৬ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি হেলির ধূমকেতু দেখা গিয়েছিল)।

২, তার উত্থান হবে ওয়াদিউল ইয়াবেস নামক স্থান থেকে (Daraa শহর থেকে)

৩,তার চেহারায় বসন্তের দাগ থাকবে।

৪,তার চোখে কোটরাগত দাগ থাকবে এবং চোখ হবে লম্বা। (সাদা চোখ)
৫,তার উত্থানের সময় সহযোগী থাকবে ৭ জন।

৬,তার বয়স হবে ৪০ এর কম।

৭, তার হাতে একটি লাল রঙের পতাকা থাকবে। অথবা, লাল রঙের উট (ট্যাংকের) উপর থাকবে।

৮, তার দুই পায়ের গোছা হবে শীর্ন ( পা হবে চিকন)।

৯, তার চুল থাকবে কোকড়ানো।

১০,তার নাম হবে আব্দুল্লাহ /আজহার ইবনে কালবিয়্যাহ /জহুরী ইবনে কালবিয়্যাহ/উসমান।


প্রথম সুফিয়ানী কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে?
--------------------------------------------------------

প্রথম সুফিয়ানী হবেন বানু কাল্ব গোত্রের লোক।অর্থাৎ সিরিয়ার বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের মৃত্যুর পর তার আত্মীয় স্বজন বা, তার বংশের মধ্য থেকেই প্রথম সুফিয়ানীর আত্নপ্রকাশ হবে। সে সাড়ে তিন বছর রাজত্ব করবে তারপর সে মারা যাবে। সে যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবেঃ

১, কালো পতাকাবাহী আসবাব জাতি (Islamic state) কে পর পর ৭টি বড় বড় যুদ্ধে পরাজিত করে  সিরিয়া থেকে বের করে দিবে।

২,হলুদ পতাকাবাহী তাওয়ারেগ জাতি (Tuareg)  কে পরাজিত করে মিশরে পাঠিয়ে দিবে। এবং সিরিয়াতে ক্ষমতা পুনরায় প্রতিষ্ঠা করবে।

৩,তুরস্ক ও আমরিকার বিরুদ্ধে স্বর্নের পাহাড় দখল কে কেন্দ্র করে সিরিয়ার দেইর আজ জুর এর নিকটবর্তী কিরকিসিয়া নামক স্থানে যুদ্ধ হবে।

** হযরত আরতাত (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি এরশাদ করেন, যখন তুর্কী(তুরস্ক) , রোম (আমরিকা) এবং খাসাফ জাতি (সম্ভবত কুর্দি বাহিনী) দিমাশকের এক প্রান্তরে জমায়েত হবে এবং দিমাশকের মসজিদের পশ্চিম প্রান্তে আরেকদল ভুপাতিত হবে তখনই শাম দেশে (সিরিয়াতে) আবকা, আসহাফ এবং সুফিয়ানীদের তিনটি ঝান্ডা প্রকাশ পাবে। দিমাশক (Damascus) এলাকাকে জনৈক লোক অবরুদ্ধ করে রাখবে। এক পর্যায়ে সেই লোক (বাশার আল আসাদ) এবং তার সাথীদেরকে হত্যা করা হলে বনু সুফিয়ান থেকে আরো দুইজন লোকের আত্মপ্রকাশ হবে। তখন যেন দ্বিতীয় বিজয় পাওয়া গেল। অতঃপর যখন আবকা গোত্রের লোকজন মিশর থেকে এগিয়ে আসবে তখনই সুফিয়ানী তার সৈন্যদের সাহায্যে তাদের সামনে আত্নপ্রকাশ করবে। রোম (আমরিকা) এবং তুর্কীরা (তুরস্ক) মিলে কারকায়সিয়া নামক স্থানে তাদেরকে হত্যা করবে এবং তাদের গোশত দ্বারা জঙ্গলে বাঘ-ভল্লুকরা তৃপ্ত হবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৩৩ ]


হাদিসের ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী, তুর্কি (তুরস্ক), রোম (আমরিকা), এবং খাসাফ জাতি (রাশিয়া) দামেস্কের     প্রান্তে একত্রিত হবে, যা ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়ে গেছে এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে।

আপনি জানেন কি? সিরিয়াতে আমরিকা, রাশিয়া এবং তুরস্কের কয়টি সামরিক ঘাটি রয়েছে?

রাশিয়া দাবী করেছে, আমরিকা সিরিয়াতে এখন পর্যন্ত ২০ টি সামরিক ঘাটি নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে হাসাকা প্রদেশ, রাক্কা, তাবকা ড্যাম, আল তানাফ, দেইর আজ জুর ও মানবিজে তাদের এসব ঘাটি গুলো রয়েছে। লিংকঃhttps://www.alaraby.co.uk/english/news/2018/3/1/russian-official-us-has-20-military-bases-in-syria
এছাড়াও পার্শ্ববর্তী ইরাক, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও তুরস্কে একাধিক মার্কিন সামরিক ঘাটি রয়েছে।

আর রাশিয়া এখন পর্যন্ত সিরিয়াতে ১৭ টি সামরিক ঘাটি রয়েছে। যার মধ্যে লাটাকিয়া ও তারতাস প্রদেশে ২ টি স্থায়ী বিমান ঘাঁটি রয়েছে। এছাড়াও শুধু রাজধানী দামেস্ক ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৪ টি ঘাটি রয়েছে।

তুরস্ক এখন পর্যন্ত সিরিয়াতে ১৬ টি থেকে ২০ টির মত সামরিক ঘাটি নির্মাণ করেছে। যার মধ্যে ইদলিব প্রদেশে ১২ টি, এবং আল বাব শহর ও আফরিন শহর বাকী সামরিক ঘাটি গুলো রয়েছে। এছাড়াও খুব শীঘ্রই তুরস্ক কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবিজে অভিযান চালাবে বলে শুনা যাচ্ছে।

 জাতিসংঘ ও ঈসরাইলের দাবী অনুযায়ী, সিরিয়াতে ইরানের ৮০ হাজার সৈন্য বাহিনী রয়েছে। ইরান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ২৭ টি সামরিক ঘাটি নির্মাণ করেছে এছাড়াও এখন পর্যন্ত ইরান সিরিয়াতে প্রতি মাসে ৩০ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। লিংকঃ https://mobile.almasdarnews.com/article/un-80000-iranian-militants-in-syria-israels-rep-to-un/


হাদিসের ভবিষ্যৎবাণী অনুযায়ী,
১,পরবর্তীতে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ও তার সহযোগীদের হত্যা করা হবে।

২,কালো পতাকাবাহী(Islamic state) পুনরায় ব্যাপক উত্থান হবে।

৩,সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিকটবর্তী হারাস্তা শহরে বড় ধরনের ভূমিধ্বস ঘটবে। যার কারণে সেখানে ১ লক্ষ লোক নিহত হবে। বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃhttps://plus.google.com/101401526729996672060/posts/eW1TQSmfNbM

৪, মিশরে হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতির (Tuareg Militant) এর উত্থান হবে।

এরপর প্রথম সুফিয়ানীর উত্থান হবে এবং সে কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতি
(Islamic state) এবং হলুদ পতাকাবাহী (Tuareg) দের এবং তুরস্ক ও আমরিকার সাথে যুদ্ধ করে সবাইকে পরাজিত করে সিরিয়া থেকে বের করে দিবে। তারপর কালো পতাকাবাকী আসহাব জাতিকে (Islamic state) কে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার জন্য ইরাকের কুফা (মসূল) নগরীতে সৈন্য বাহিনী প্রেরন করবে। কিন্তু ইরাক ও সিরিয়ার বর্ডারে এলে সে মৃত্যু বরন করবে।


দ্বিতীয় সুফিয়ানী কার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে?
---------------------------------------------------------

" সুফিয়ানী যে লোক শেষ যুগে সিরিয়াতে দখল প্রতিষ্ঠা করবে সে বংশগতভাবে খালিদ ইবনে ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া ইবনে আবি সুফিয়ানের বংশধর হবে। তার সহচরদের মধ্যেও "কালব্যিয়া" বা "কাল্ব” গোত্রের লোক বেশি হবে। মানুষের রক্ত ঝরানো তাদের বিশেষ অভ্যাসে পরিণত হবে। যে লোকই বিরোধিতা করবে, তাকেই হত্যা করা হবে। এমনকি গর্ভস্থিত সন্তানদের পর্যন্ত হত্যা করবে। যখন হারাম শরীফে ইমাম মাহদীর আগমনের খবর প্রকাশ পাবে তখন এই শাসক ইমাম মাহদীর  বিরুদ্ধে একটি বাহিনী প্রেরণ করবে”।

(মাজাহিরে হক জাদিদ, খণ্ড ৫, পৃষ্ঠা ৪৩)

অর্থাৎ দ্বিতীয় সুফিয়ানী বংশের দিক দিয়ে উমাইয়া বংশের আবু সুফিয়ানের বংশধর হবে। এবং বানু কাল্ব প্রথম সুফিয়ানীর বোনের ছেলে বা, ভাগিনা হবে।


* হযরত আরতাত (রাঃ) বলেন, “দ্বিতীয় সুফিয়ানির জামানায় বিকট এক আওয়াজ আসবে। আওয়াজটি এতই বিকট হবে যে, প্রত্যেক গোত্রই মনে করবে – তাদের নিকটবর্তী লোকেরা ধ্বংস হয়ে গেছে”।

(আল ফিতান, নুয়াইম বিন হাম্মাদ, ৮৫০)

* হযরত আরতাত রহঃ থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, দ্বিতীয় সুফিয়ানীর যুগে যুদ্ধ-বিগ্রহ এত ব্যাপক আকার ধারন করবে, যদ্বারা প্রত্যেক জাতি মনে করবে তার পার্শ্ববর্তী এলাকা ধ্বংস হয়ে গিয়েছে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৩২ ]


পৃথিবীর সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষ দ্বিতীয় সুফিয়ানী যাদের বিরুদ্ধে পর্যায় ক্রমে যুদ্ধ করবেঃ

১,ইরাকের কুফা নগরীতে কালো পতাকাবাহী আসহাব জাতি ( Islamic state) কে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে কুফা নগরী আক্রমণ করবে। সেখানে ৭০ হাজার বা, ১ লক্ষ সৈন্য কে হত্যা করবে।

**হযরত ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্নিত, রাসূল (সাঃ) বলেন, যখন সুফইয়ানী ফোরাত নদী পার হবে এবং এমন এক জায়গায় পৌঁছবে, যার নাম হবে আকের কূফা। আল্লাহ তা’আলা তার অন্তর থেকে ঈমানকে মুছে দিবেন। আর সেখানে একটি নদীর দিকে যে নদীর নাম হবে দাজীল (অর্থাৎ দাজলা নদী Tigris river) । উক্ত নদীর নির্জন প্রান্তরে ৭০ হাজার তরবারীধারী (যোদ্ধাদের) সে হত্যা করবে। আর তাদের ব্যতীত তাদের থেকে বেশী লোক থাকবে না। অতপর  স্বর্ণের পাহাড় প্রকাশ পাবে এবং তারা যুদ্ধ করবে এবং ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে। অতপর তারা গর্ভবতী মহিলাদের পেট চিড়বে। তারা বলবে হয়তো সে কোন গোলাম (Islamic state এর সৈন্যদের দ্বারা) কর্তৃক গর্ভবতী হয়েছে । আর দাজলা নদীর পাড়ে দিকে মহিলাগণ কুরাইশদের নিকট সাহায্য কামনা করবে। সুফুনের (তিরকিত শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকার) অধিবাসীদেরকে তারা ডাকবে যাতে তাদেরকে উঠিয়ে নেয়(উদ্ধার করে) এবং যাতে তারা তাদেরকে মানুষের সাথে সাক্ষাত করতে পারে। তখন তারা বনু হাশেম (আসহাব জাতি Islamic state) উপর শত্রুতার কারণে তাদেরকে উঠাবে না। আর তোমরা বনু হাশেমের (আসহাব জাতি Islamic State) সাথে শত্রুতা পোষণ করিও না। কেননা তাদের বংশ থেকেই রহমতের নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এবং তাদের থেকে জান্নাতে পাখি (হযরত জাফর ইবনে আবু তালেব রাঃ জন্মগ্রহন)  করেছেন। আর মহিলাদের অবস্থা হল যখন রাত গভীর বা অন্ধকার হবে তখন তারা উহার গর্ত সমূহে আশ্রয় গ্রহণ করবে যে গর্তগুলো থাকবে ফাসেকদের থেকে লুকায়িত থাকবে। অতপর তাদের নিকট সাহায্য আসবে (খোরাসানের বাহিনী) । এমনকি তারা (খোরাসানের বাহিনী) সুফইয়ানীর সাথে যে সমস্ত মহিলা ও সন্তান সন্ততি থাকবে তাদেরকে বাগদাদ ও কুফা থেকে উদ্ধার করবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৮৫ ]

এই হাদিসটিতে ইরাকের কুফা নগরীতে আসহাব জাতির (Islamic state) উপর গনহত্যার পর, মহিলা ও শিশুদের যে ভয়াবহ দুর্ভোগে পরতে হবে তার বর্ণনা করা হয়েছে। সেখানে আসহাব জাতির (Islamic state) সকল যোদ্ধাদের হত্যার পর তাদের স্ত্রী ও সন্তানগন ধ্বংসস্তুপে আটকা পরবে, তখন তারা সাহায্য চাইলেও কেউ তাদের উদ্ধার করবেনা। একপর্যায়ে আফগানিস্তান ও তার আশপাশের দেশ থেকে খোরাসানের বাহিনী আত্নপ্রকাশ করবে এবং তারা সুফিয়ানীকে পরাজিত করে তাদের কে উদ্ধার করবে।

২, ইরাক রাজধানী বাগদাদ শহর আক্রমণ করবে এবং বাগদাদ শহর সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিবে।

৩, হলুদ পতাকাবাহী তাওয়ারেগ জাতি (Tuareg) সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে মিশর অক্রমন করবে এবং মিশরকে ধ্বংস করে খন্ড বিখন্ড করে দিবে।

৪, মনসুর ইয়ামানী,  হারস হাররাস ও শুয়াইব ইবনে সালেহ  এর নেতৃত্বে খোরাসানের কালো পতাকাবাহী দল সুফিয়ানী সৈন্যদের কে আক্রমণ করে পরাজিত করে দিবে।

** হযরত আলী ইবনে আবু তালেব (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন যখন সুফইয়ানী ঘোড়া (সৈন্য) কূফার দিকে বের হবে। সে খোরাসানবাসী দের অনুসন্ধানের জন্য সৈন্য প্রেরণ করবে। আর এদিকে খোরাসানবাসীরা মাহদী (আঃ) খোজে বের হবে। অতপর সে (মনসুর ইয়ামানী) এবং হাশেমী ব্যক্তি কালো ঝান্ডা সহকারে যে ঝান্ডাবহী দলের সম্মুখভাগে থাকবে শুয়াইব ইবনে সালেহ। অতপর তার এবং সুফইয়ানীর দলের ইসতাখাররা বাবের (ইরানের ঐতিহাসিক স্থানের নাম) নিকট সাক্ষাৎ ঘটবে । অতপর তাদের মাঝে বড় একটি যুদ্ধ হবে। অতপর (খোরাসানের) কালো পতাকাবাহী দল প্রকাশ পাবে। এবং সুফিয়ানীর সাথী বা দল ভেগে যাবে। আর সে সময়ই মানুষ মাহদী (আঃ) এর জন্য আকাংখা করবে। এবং তাকে ডাকবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯১২ ]

অর্থাৎ ইরাকের কুফা নগরীতে আসহাব জাতির ( Islamic state) এর উপর গনহত্যার পর, তাদের(Islamic state) এর অন্যান্য সহযোগীরা কাকেশাশ, খোরাসান ও ইয়েমেন থেকে   সংগঠিত হয়ে ইরানের ইস্তাখর প্রদেশে সুফিয়ানী বাহিনীকে পাল্টা হামলা করবে এবং তখন সুফিয়ানী বাহিনী পরাজিত হবে। মূলত এই দলটিকেই খোরাসানের বাহিনী বলা হবে। আর সেই সময়েই ইমাম মাহদীকে খুজতে থাকবে। কিন্তু ইমাম মাহদীর আত্নপ্রকাশ হবে ৬ বছর পরে।


৫,কিছুদিন পর সুফিয়ানী তাদেরকে পুনরায় হামলা করবে এবং পরাজিত করে দেশ ছাড়া করবে।

৬, সৌদি আরবে গৃহ যুদ্ধের কারণে সেখানে উত্থান হওয়া কালো পতাকা দলকে ধ্বংস করতে সুফিয়ানী সৌদি আরব আক্রমণ করবে। এবং সেখানে প্রচন্ড হত্যা ও ধ্বংসলীলা চালাবে।

** হযরত আলী (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন মদীনায় (সুফিয়ানীর) একদল সৈন্যদল প্রেরণ করা হবে। অতপর তারা হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর পরিবার পরিজনদের থেকে যারা উহার উপর সক্ষম তাদের আটক করবে। আর বনু হাশেমের পুরুষ ও মহিলাদিগকে হত্যা করবে। আর ঐ সময়ই মাহদী (আঃ) ও মনসুর দুই ব্যক্তি মদীনা থেকে মক্কায় পালায়ন করবেন। অতপর তাদের দুজনের অনুসন্ধানের (আটক করার) জন্য সৈন্য প্রেরণ করা হবে। আর তারা দুজন মিলিত হবে (বেচেঁ যাবে) আল্লাহ তা’আলা সম্মান ও আল্লাহ তা’আলার আমানতে তথা নিরাপদে থাকবে ।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯২৩ ]

বলা হয়ে থাকে, ইয়াজিদ ইবনে মুয়াবিয়া যখন অন্যায় ভাবে ক্ষমতা দখল করেছিল, তখন মদিনায় বিদ্রোহ দেখা দিয়েছিল, তারপর ইয়াজিদ পুরো মদিনা শহরকে ধ্বংসস্তুপে পরিনত করেন। আর হত্যা এবং ধর্ষণে মেতে ওঠে তার বাহিনী, ইয়াজিদের বাহিনী মদিনায় ১ হাজার নারীকে ধর্ষণ করেছিল । ঠিক একইভাবে ইমাম মাহদীর আত্নপ্রকাশের পূর্বে সুফিয়ানী আবার মদিনাকে ধ্বংসস্তুপে পরিনত করবেন। সুফিয়ানীর এত মারাত্মক ভাবে মদিনা শহরকে ধ্বংস, হত্যা ও ধর্ষণলীলা চালাবেন, ইয়াজিদের তখনকার ধ্বংসলীলাকে মনে হবে একটি বেতের আঘাতের ন্যায় ।


৭, কাবা শরীফে ইমাম মাহদীর বাইয়াতের খবর শুনে পুনরায় সৌদি আরবে ৭০ হাজার সৈন্য বাহিনী পাঠাবে। এবং মক্কা ও মদিনার মধ্যখানে বাইদা নামক স্থানে সবাই ধ্বংসে যাবে।


** হযরত আবু জা’ফর (রাঃ) হতে বর্ণিত যে, তিনি বলেন তাদের থেকে কাল্বী গোত্রের দুই জন ব্যক্তি ব্যাতীত আর কেই বাচতে পারবে না। যে দুই জনের নাম হবে ওবার এবং ওবাইর। তাদের দুইজনের চেহারা তাদের পিছনের দিকে ঘুরে যাবে। ‘

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৯৪৬ ]

** শিয়াদের জন্য এই হাদিসটি যথেষ্ট, তারা দিন রাত ইমাম মাহদীর আগমনের অপেক্ষায় আছে। অথচ, দুঃখজনক হলেও সত্যি, তারাই আজকে যেমনি ভাবে ইরাক ও সিরিয়াতে কালো পতাকাবাহী লোকজনের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত, ঠিক তেমনি ইমাম মাহদীকে ও সন্ত্রাসী আর জঙ্গি মনে করে হত্যা করতে বাহিনী পাঠাবে, যাদের অধিকাংশই হবে বানু কাল্ব গোত্রের। তবে আল্লাহ্‌র আযাবের কারনে কেবল দুই জন ব্যতীত সবাই মাটির নিচে ধ্বংসে যাবে।


৮,কাল্বের যুদ্ধে সিরিয়াতে ইমাম মাহদীর সৈন্যদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং শোচনীয় ভাবে পরাজিত হওয়ার পর ইমাম মাহদী তাকে হত্যা করবে।

** হযরত মুহাদ্দিস হতে বর্ণিত যে, মাহদী (আঃ) সুফইয়ানী ও কাল্বী গোত্রের ব্যক্তি বাইতুল মুকাদ্দাসে যুদ্ধ করবে। যখন সে বাইয়াত প্রত্যাখ্যান করবে। অতপর সুফইয়ানীকে বন্দি করে আনা হবে। অতপর বাবে রিহহাতে তাকে জবাই করা হবে। অতপর তাদের মহিলাদের ও তাদের পশুকে দামেস্কের সিড়ির নিকটে বিক্রি করা হবে।

[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ১০০৮ ]

উল্লেখ, ইমাম মাহদীর আত্নপ্রকাশের পর যখন বাইদার প্রান্তরে মরুভূমিতে সুফিয়ানীর সৈন্য বাহিনী ধ্বংসে যাবে, তখন সুফিয়ানীর অনুগত দেইর আজ জুরের গভর্নর সুফিয়ানীকে ইমাম মাহদীকে আনুগত্য প্রকাশ করতে চাপ দিবে, তখন সে বাধ্য হয়ে ইমাম মাহদীকে বাইয়াত দিবে। কিন্তু পরবর্তীতে বানু কাল্ব গোত্রের তার সহযোগীদের প্ররোচনায় তিন বছর পর ইমাম মাহদীকে অস্বীকার করবে এবং তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করবে। অবশেষে সুফিয়ানী শোচনীয় ভাবে পরাজিত হয়ে ইমাম মাহদীর সৈন্যদের হাতে আটক হবে। তার পর তাকে হত্যা করা হবে।



তাই, কোন উপসংহারে না পৌঁছালেও সচেতন মুসলিম হিসাবে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি থাকবে হাদিসে বর্ণিত মুসলিম ভূখণ্ডগুলোর প্রতিটি রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক সর্বোপরি সামরিক পরিস্থিতির উপর।