আল্লাহ তায়ালা কত দ্রুত ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের আলামত বাস্তবায়ন করে দিচ্ছেন, তা কেবল আখিরুজ্জামান নিয়ে যারা পড়াশোনা করেন, তারাই কিছুটা বুঝতে পারছেন। একদিকে মুসলিম উম্মাহর উপর বৃষ্টির ন্যায় ফেতনা বর্ষিত হচ্ছে, অন্যদিকে মুসলিম উম্মাহর সুদিন খুব দ্রুতই ফিরে আসছে। বর্তমানে সিরিয়াতে রাশিয়ান বাহিনী ও তাদের সহযোগীরা যেভাবে মুজাহিদিনদের বিরুদ্ধে ভয়ংকর যুদ্ধে লিপ্ত, যার কারণে মুজাহিদিনরা প্রায় নিঃশেষ হয়ে যাওয়া পথে। কিন্তু আল্লাহ তায়ালা হারাস্তার ভূমিধ্বসের মাধ্যমে খুব শীঘ্রই সিরিয়ার অবস্থা পরিবর্তন করে দিবেন, যার কারণে রাশিয়ান বাহিনী ও সুফিয়ানী বাহিনী মারাত্মক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে।
** "ততদিন পর্যন্ত ইমাম মাহদীর আবির্ভাব হবে না, যতদিন না দামেস্কের নিকটবর্তী হারাস্তা নামক ভূমিধ্বসের কারনে ধ্বংস না হয় "।
(ফাওয়াহিদ আল ফিকহ্ আল মাহদী আল মুনতাজার, লেখকঃ মারি বিন ইউসুফ কারামী হাম্বলী)
হারাস্তা নামক এলাকাটি কোথায়?
_______________________________
হারাস্তা (Harasta) শহরের আরো কয়েকটি নাম রয়েছে যেমন, হারাস্তা, হিরিস্তা(Hirista), হারাস্তা আল বাসাল (Harasta Al Bassal) এছাড়াও হাদিসের ভাষায় খুরাস্তা এবং আরম জনপদ, দামেস্কের বড় মসজিদের দেয়াল ধ্বসে পরবে বলা হয়েছে। হারাস্তা(Harasta) নামক শহরটি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের নিকটবর্তী আল গৌতা শহরের একটি এলাকার নাম। এটি দামেস্কের নিকটবর্তী জোবার(Jobar) শহর ও দৌমা(Duma) শহরের মধ্যবর্তী ছোট শহরের নাম। হারাস্তা (Harasta) শহরটি মূলত দৌমা জেলা (Duma District) এর আওতাধীন একটি শহর। ২০০৭ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী হারাস্তা শহরের জনসংখ্যা ছিল ৩৪০০০ এর কিছু বেশি। এখানের তাপমাত্রা সাধারণত ২৪° ডিগ্রি থেকে ৩৭° ডিগ্রি থাকে।
হারাস্তার ভূমিধ্বস সম্পর্কে হাদিসের ভবিষ্যৎবাণীঃ
______________________________________________
** হযরত আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, কালো ঝান্ডাবাহী (Islamic state of Iraq and syria - ISIS) লোকজনের মাঝে মতবিরোধ দেখা দিলে ইরম নামক এলাকায় একটি গ্রাম ধসে পড়বে, যে গ্রামকে মূলতঃ খোরাস্তা (হারাস্তা) বলা হয়। আর তখনই শাম (সিরিয়া) দেশে থেকে তিন প্রকার ঝান্ডার অধিকারী লোকজনের আগমন হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৫৯৫ ]
** হযরত মুহাম্মদ ইবনুল হানাফিয়্যাহ (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন মাগরিব বাসিদের(Tuareg Militant) প্রাথমিক দল দামেস্কের মসজিদে প্রবেশ করবে। তারা সেখানে প্রবেশ করে মসজিদের সৌন্দর্য্য ও কারুকার্য গুলো দেখে আশ্চর্য্য প্রকাশ করতে থাকবে। হঠাৎ করে ভুমকম্প আরম্ভ হবে, যার ফলে দামেস্কের মসজিদের পশ্চিম পার্শ্বে গভীর গর্ত হয়ে যাবে এবং হারাস্তা নামক গ্রাম নিচের দিকে ধ্বসে পরবে। এহেন পরেস্থিতিতে সুফিয়ানী প্রকাশ পাবে এবং তাদের(Tuareg Militant) সাথে যুদ্ধ করবে আর তাদেরকে মিশরের দিকে ধাওয়া করবে। কিছুদিন পর আবারো সে আসবে এবং মাশরিক বাসিদের(Islamic state) সাথে যুদ্ধ করে তাদেরকে ইরাকের দিকে পাঠিয়ে দিবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭৭০ ]
** হযরত তাবী (রহঃ) হযরত কা’ব (রাঃ) থেকে বর্ননা করেন, তিনি বলেন, যখন তুমি হলুদ ঝান্ডাবাহী (Tuareg Militant) দলকে ইস্কান্দারিয়া (মিশরের আলেকজেন্দ্রীয়া) অবস্থান করতে দেখবে, অতঃপর তারা সুররাতাশ (তাদের একটি গ্রুপ) শামে (সিরিয়াতে) আসবে তখনই হারাস্তা নামক দামেস্কের একটি জনপদ ধূলিস্যাৎ হয়ে যাবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭৮১ ]
** হযরত কা’ব (রহঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, খারাস্তা (হারাস্তা) নামক কোনো এলাকা যখন ধসে যাবে এবং আব্বাছের দুইজন খলীফাকে উৎখাত করা হবে আর আব্বাসীয় বংশের লোকজনের মাঝে ব্যাপকভাবে মতানৈক্য দেখা দিবে। একপর্যায়ে বারোটি বড় এবং বারোটি ছোট পতাকা উত্তোলন করা হবে তখন তাদের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় ফেৎনা জয়লাভ করতে থাকবে। ধীরে ধীরে রাজত্ত্ব তাদের হাতছাড়া হয়ে যাবে এবং শামের(সিরিয়া) বিরুদ্ধে বর্বর জাতির(Tuareg militant) আবির্ভাব ঘটবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬০৩ ]
সুবহানাল্লাহ, বর্তমান সিরিয়া ও ইরাকের বিপর্যয় সম্পর্কে কত সুন্দর ভাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) ও তার সাহাবীরা আমাদেরকে সতর্ক করে গেছেন। এই হাদিসে হলুদ পতাকাবাহী বর্বর আবকা জাতির (Tuareg Militant) আবির্ভাবের পূর্বে "১২টি বড় ও ১২টি ছোট পতাকা উত্তোলন করা হবে যার কারণে তাদের (মুজাহিদিনদের) রাজত্ব হাতছাড়া হয়ে যাবে এবং ফিতনা জয় লাভ করবে"
আপনি জানেন কি? ইরাকের মসূল শহর উদ্ধারের জন্য ইসলামিক ইস্টেট এর বিরুদ্ধে কতটি দেশ ঐক্যবদ্ধ হয়ে যুদ্ধ করছে? উত্তর হলোঃ ১২ টি। বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃhttps://islamicastrolgy.blogspot.com/2018/03/blog-post_15.html?m=1
** হযরত ওয়ালিদ (রহঃ) হতে বর্নিত, তিনি বলেন, রমযান মাসের কিছু দিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা দামেস্ক বাসীদের উপর এক ধরনের ভুমিকম্প হতে দেখলাম। যা দ্বারা ১৩৭ হিজরী সনের রমযান মাসে অনেক লোক মৃত্যু বরন করে।তবে খুরাস্তা (হারাস্তা) নগরীতে যে ভূমিধসের কথা প্রসিদ্ধ রয়েছে আমরা দেখিনি।
[আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৬৩৯]
** হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাছ (রাঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, একবার তিনি অন্ধ হয়ে যাওয়ার পর দ্রুত গতিতে চলছিলেন। যার ফলে বিভিন্ন এলাকা অতিক্রম করছিলেন, অতঃপর তিনি জিজ্ঞেস করলেন ‘ইরাম’ (হারাস্তা) জনপদ কোথায় অবস্থিত?
আমি বললাম, ইরাম (হারাস্তা) হচ্ছে, (তারা যেখানে ছিলেন সেখান থেকে) মাগরিবের (পশ্চিম) দিকে ১২ মাইলের দুরত্বে।
[আল ফিতান:নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৭২২]
হারাস্তা ভূমিধ্বসের পূর্বে কি কি ঘটবে ?
___________________________________
"হারাস্তা ভূমিধ্বসের পূর্বে তুর্কি (তুরস্ক), রোম (আমরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) ও খাসাফ জাতি (রাশিয়া) সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কের প্রান্তে একত্রিত হবে" (কিতাবুল ফিতানঃ হাদিস নং - ৮৩৩)এই ভবিষ্যৎবাণীটি ইতোমধ্যেই বাস্তবায়ন হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত হচ্ছে।
আপনি জানেন কি? সিরিয়াতে আমরিকা কতটি ঘাটি স্থাপন করেছে? রাশিয়া কতটি ঘাটি স্থাপন করেছে? তুরস্ক কতটি ঘাটি স্থাপন করেছে?
রাশিয়া দাবী করেছে, আমরিকা সিরিয়াতে এখন পর্যন্ত ২০ টি সামরিক ঘাটি নির্মাণ করেছে। এর মধ্যে হাসাকা প্রদেশ, রাক্কা, তাবকা ড্যাম, আল তানাফ, দেইর আজ জুর ও মানবিজে তাদের এসব ঘাটি গুলো রয়েছে। লিংকঃhttps://www.alaraby.co.uk/english/news/2018/3/1/russian-official-us-has-20-military-bases-in-syria
এছাড়াও পার্শ্ববর্তী ইরাক, জর্ডান, সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার ও তুরস্কে একাধিক মার্কিন সামরিক ঘাটি রয়েছে।
আর রাশিয়া এখন পর্যন্ত সিরিয়াতে ১৭ টি সামরিক ঘাটি রয়েছে। যার মধ্যে লাটাকিয়া ও তারতাস প্রদেশে ২ টি স্থায়ী বিমান ঘাঁটি রয়েছে। এছাড়াও শুধু রাজধানী দামেস্ক ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকায় ৪ টি ঘাটি রয়েছে।
তুরস্ক এখন পর্যন্ত সিরিয়াতে ১৬ টি থেকে ২০ টির মত সামরিক ঘাটি নির্মাণ করেছে। যার মধ্যে ইদলিব প্রদেশে ১২ টি, এবং আল বাব শহর ও আফরিন শহর বাকী সামরিক ঘাটি গুলো রয়েছে। এছাড়াও খুব শীঘ্রই তুরস্ক কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে মানবিজে অভিযান চালাবে বলে শুনা যাচ্ছে।
জাতিসংঘ ও ঈসরাইলের দাবী অনুযায়ী, সিরিয়াতে ইরানের ৮০ হাজার সৈন্য বাহিনী রয়েছে। ইরান সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় ২৭ টি সামরিক ঘাটি নির্মাণ করেছে এছাড়াও এখন পর্যন্ত ইরান সিরিয়াতে প্রতি মাসে ৩০ বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। লিংকঃ https://mobile.almasdarnews.com/article/un-80000-iranian-militants-in-syria-israels-rep-to-un/
হারাস্তার ভূমিধ্বসে কতজন মানুষ মারা যাবে?
_________________________________________
** হযরত আবু জাফর আল বাকের (রহঃ) থেকে বর্নিত তিনি বলেন, আমিরুল মুমিনীন (হযরত আলী রাঃ) বলেছেন, যখন শামে (সিরিয়াতে) দুটি বৃহৎ দলের মধ্যে মতানৈক্য দেবে এবং এটি শেষ হবে না যতক্ষণ না আল্লাহ তায়ালা একটি নিদর্শন না প্রকাশ করেন?
তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হল, হে আমিরুল মুমিনীন সেই নিদর্শন টা কি?
উত্তরে তিনি বলেন, শামে (সিরিয়াতে) একটি ভূমিকম্প দেখা দিবে যার কারণে এক লক্ষ লোক ধ্বংস হবে। যার (হারাস্তা ভূমিধ্বসের) মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের উপর রহমত বর্ষন করবেন, আর কাফেরদের উপর আজাব প্রদান করবেন। যখন এটি ঘটবে, তখন পশ্চিম দিক থেকে ধূসর বর্নের ঘোড়া সহকারে হলুদ পতাকাবাহী দল এগিয়ে আসবে। তারা ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড ও ধ্বংসলীলা চালাবে। তখন তুমি দেখবে দামেস্কের একটি গ্রাম যাকে হারাস্তা বলা হয়, সেটি ধ্বসে পরবে। তারপর দামেস্কের পার্শ্ববর্তী শুষ্ক উপত্যকা ওয়াদিউল ইয়াবেস থেকে ওয়াকিলাতুল আকবাদ (সুফিয়ানী) বেরিয়ে আসবে। তারপর তুমি মাহদীর আবির্ভাবের জন্য অপেক্ষা কর।
(কিতাবুল গাইবাত, সুফিয়ানীর উত্থানের অধ্যায়, ১৮ নং অধ্যায়, ১৬ নং হাদীস, পৃষ্ঠা ৪৪৬) (আল গাইবাত আত তুশি লেখকঃ শেখ তুশী, পৃষ্ঠা ৪৪১, আল খারায়েজ ওয়াল জারাইয়্যাহ, খন্ড ৩, পৃষ্ঠা ১১৫১, আল ওদাদ ওয়াল কাওইয়া, পৃষ্ঠা ৭৬)
এই হাদিসে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, হারাস্তার ভূমিধ্বসে এক লক্ষ লোক নিহত হবে, সুতরাং এটি সাধারণ কোন ভূমিধ্বস হবে না। খুব সম্ভবত বড় ধরনের আন্তমোহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র (Intercontinental ballistic missile - ICBM) আঘাতে পুরো হারাস্তা এলাকাটি মাটির নিচে ধ্বসে পরবে।
এছাড়াও এই হাদিসে আরো বলা হয়েছে,"হারাস্তা ভূমিধ্বসের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা কাফেরদেরকে কঠিন আজাব দিবেন, মুমিনদের জন্য রহমত প্রদান করবেন"। অর্থাৎ তুরস্ক ও আমরিকা যখন রাশিয়া, ইরান, হিজবুল্লাহ ও শিয়া মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করবে তখন ইসলামিক ইস্টেট ইরাকের বাগদাদ, মসূল, সিরিয়ার হোমস শহর পুনরায় দখল করে নিবে। আর সম্ভবত তুরস্ক ও আমরিকার সমর্থন পুষ্ট আহরার আল শাম, FSA এবং আল কায়দার অনুসারী তাহরির আল শাম পুনরায় আলেপ্পো, দামেস্ক শহর দখল করে নিবে। (তবে আল্লাহ সবচেয়ে ভালো জানেন)
হারাস্তার ভূমিধ্বসে কারা ধ্বংস হবে?
________________________________
** হযরত আরতাত (রহঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বর্ননা করেন, যখন তুর্কী(তুরস্ক) , রোম(আমরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) এবং খাসাফ জাতি(রাশিয়া) দামেস্কের এক প্রান্তরে(ইস্টার্ন গৌতা এলাকায়) জমায়েত হবে এবং দামেস্কের মসজিদের পশ্চিম প্রান্তে আরেকদল(খাসাফ জাতি ও তাদের সহযোগী অর্থাৎ রাশিয়া, ইরান, সিরিয়ার সেনাবাহিনী, হিজবুল্লাহ ও শিয়া মিলিশিয়া) ভুপাতিত হবে তখনই শাম দেশে(সিরিয়াতে) আবকা (Tuareg militant) , আসহাফ এবং সুফিয়ানীদের তিনটি ঝান্ডা প্রকাশ পাবে। দামেস্ক এলাকাকে জনৈক লোক(বাশার আল আসাদ) অবরুদ্ধ করে রাখবে। এক পর্যায়ে সেই লোক(বাশার আল আসাদ) এবং তার সাথীদেরকে(রাশিয়া, ইরান, হিজবুল্লাহ, সিরিয়ার সেনাবাহিনী ও শিয়া মিলিশিয়াদের) হত্যা করা হলে বনু সুফিয়ান থেকে আরো দুইজন(প্রথম সুফিয়ানী ও দ্বিতীয় সুফিয়ানী) লোকের আত্মপ্রকাশ হবে। তখন যেন(সুফিয়ানী বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের জন্য) দ্বিতীয় বিজয় পাওয়া গেল। অতঃপর যখন আবকা গোত্রের(Tuareg) লোকজন মিশর থেকে এগিয়ে আসবে, তখনই সুফিয়ানী তার সৈন্যদের সাহায্যে তাদের সামনে আত্মপ্রকাশ করবে। তারপর রোম(আমরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) এবং তুর্কীরা(তুরস্ক) মিলে কারকায়সিয়া(দেইর আজ জুর) নামক স্থানে তাদেরকে হত্যা করবে এবং তাদের গোশত দ্বারা জঙ্গলে বাঘ-ভল্লুকরা তৃপ্ত হবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৩৩ ]
এই হাদিস থেকে বুঝা যায়, হারাস্তার ভূমিধ্বসে খাসাফ জাতি বা, খাজার জাতি (রাশিয়া ও তার সহযোগী ইরান, হিজবুল্লাহ, শিয়া মিলিশিয়ারা) ধ্বংসের সম্মুখীন হবে। কারন,
১, তিনটি জাতি অর্থাৎ তুর্কি (তুরস্ক), রোম (আমরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) ও খাসাফ জাতি বা, খাজার জাতি (রাশিয়া) হারাস্তা ভূমিধ্বসের পূর্বে দামেস্কের প্রান্তে একত্রিত হবে। কিন্তু ভূমিধ্বসের পর তুর্কি (তুরস্ক), রোম (আমরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্স) ঠিকই ফোরাত নদীর তীরে কিরকিসিয়ার প্রান্তে (দেইর আজ জুর) সোনার পাহাড় দখলের জন্য যুদ্ধ করবে। কিন্তু ভূমিধ্বসের পর খাসাফ জাতি বা, খাজার জাতির (রাশিয়া ও তাদের সহযোগীদের)অস্তিত্ব সিরিয়াতে থাকবে এমন কোন হাদিসে পাওয়া যায় না।
২, যদিও সুফিয়ানীর সহযোগীরা বানু কাল্ব গোত্রের লোক (অর্থাৎ Syrian Arab Army- SAA) হবে। এমনকি হলুদ পতাকাবাহী আবকা জাতির (Tuareg Militant) দের এক তৃতীয়াংশ সুফিয়ানীর সাথে যোগদান করবে, কিন্তু হারাস্তার ভূমিধ্বসের পর খাসাফ জাতি (রাশিয়া) এখনকার মত সুফিয়ানীকে সহযোগীতা করবে এমন কোন ভূমিকা পাওয়া যায় না।
সিরিয়া যুদ্ধে বিদ্রোহীরা কেন অসহায় ভাবে আসাদ সরকারের কাছে আত্মসমর্পণ করছে?
____________________________________________________
আল্লাহ তায়ালা যা করেন, তা আমাদের মঙ্গলের জন্যই করেন যদিও আমরা তাৎক্ষণিক ভাবে বুঝতে পারি না। সিরিয়া যুদ্ধে বাশার আল আসাদ সরকারের কাছে আল গৌতার কয়েকটি শহরে যেমন জোবার, দৌমা, হারাস্তা, ইরবিন, কাফর বাতনা সহ পুরো পূর্ব গৌতা(Eastern Gouta) ২০১২ সাল থেকেই কয়েকটি বিদ্রোহী গ্রুপ যেমন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহরাইন সমর্থন পুষ্ট জাইশ আল ইসলাম, তুরস্কের সমর্থন পুষ্ট আহরার আল শাম ও ফাইলাক আর রহমান, আল কায়দার অনুসারী তাহরির আল শাম এর নিয়ন্ত্রণে ছিল। বাশার আল আসাদ সরকার একাধিক বার চেষ্টা করেও ইস্টার্ন গৌতা পূর্নদখল করতে পারে নি। ২০১৩ সালে আসাদ সরকার গৌতা শহরে ভয়াবহ রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিল, যার কারণে ১৪০০ বেসামরিক লোক নিহত হয়েছিল। এছাড়াও আরো একাধিক বার তারা রাসায়নিক হামলা চালিয়েছিল।
কিন্তু ২০১৭ সালের শেষের দিকে মাত্র ২ মাসের যুদ্ধের পর বিদ্রোহীরা পরাজিত হয়ে অসহায় ভাবে আত্মসমর্পণ করে সকল বিদ্রোহী গ্রুপ গুলো ইস্টার্ন গৌতা ছাড়তে বাধ্য হয়। সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার ছিল, সৌদি আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থনপুষ্ট সবচেয়ে বেশি অস্ত্রের অধিকারী জাইশুল ইসলাম কোন প্রকার যুদ্ধ ছাড়াই আসাদ সরকারের সাথে সমঝোতা করে সকল অস্ত্র আসাদ সরকারের হাতে তুলে দিয়ে দৌমা শহর ত্যাগ করে। তাদের অস্ত্রের মধ্যে ৯০ টি ট্যাংক, কয়েক শত RPGs, যুদ্ধ বিমান ধ্বংসকারী শত শত এন্টি এয়ার ক্রাফট, শত শত ট্যাংক ধ্বংসকারী (Anti-Tank Guided missiles - ATGM) হাজার হাজার মর্টার লাঞ্চার , AK47, গোলাবারুদ ছিল। বিস্তারিত জানতে লিংকে যানঃhttps://mobile.almasdarnews.com/article/jaysh-al-islam-hands-over-large-quantity-of-heavy-weapons-to-russian-military-video/
https://googleweblight.com/i?
https://mobile.almasdarnews.com/article/departing-jaysh-al-islam-militants-handover-large-number-of-heavy-weapons-in-douma-photos/&hl=en-IN
যদিও বিদ্রোহীরা আলেপ্পো, হামা, ইদলিব প্রদেশের আবু দুহুর এলাকা, ইস্টার্ন গৌতা, হোমস, দুমাইর এলাকা থেকে খুব দ্রুতই নামে মাত্র যুদ্ধ অথবা, কোন প্রকার যুদ্ধ ছাড়াই সমঝোতা করে ইদলিব প্রদেশে চলে যাচ্ছে। হয়ত তারা খুব শীঘ্রই দক্ষিণ সিরিয়ার দারা শহর থেকে বিদ্রোহীদের ইদলিব প্রদেশে পাঠিয়ে দিবে, তারপর হয় বাশার আল আসাদ সরকার রাক্কা প্রদেশ, হাসাকা প্রদেশ না হয় ইদলিব আক্রমণ করবে আর তখনই তুরস্ক ও আমরিকার আক্রমণের মুখে পরবে বাশার আল আসাদ সরকার। কারণ ইতোমধ্যেই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ব্লাদিমির পুতিন ঘোষণা দিয়েছেন বাশার আল আসাদের বিজয়ের পর সকল বিদেশী দেশের সামরিক বাহিনীর (আমরিকা, তুরস্ক, ও ফ্রান্সের) প্রত্যাহার করতে হবে, যা আমরিকা, তুরস্ক ও ফ্রান্স কখনো মেনে নিবে না। Syrian Observatory for Human Rights এর নিউজ লিংকঃhttps://m.facebook.com/story.php?story_fbid=1483941445047522&id=121855461256134
আর এভাবেই আল্লাহ তায়ালা খুব শীঘ্রই বাশার আল আসাদ সরকার ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে আমরিকা ও তুরস্কের মাধ্যমে আরো ভয়ংকর যুদ্ধ চাপিয়ে দিবেন, তাই আল্লাহ তায়ালা তার পরিকল্পনা অনুযায়ী খুব দ্রুতই বিদ্রোহীদের কে সমস্ত সিরিয়া থেকে বের করে নিয়ে ইদলিব প্রদেশে একত্রিত করছেন। হয়তো তাদেরকে হারাস্তার ভূমিধ্বস থেকে আল্লাহ রক্ষা করতে চান অথবা, তারা তুরস্ক ও আমরিকার সহযোগী বাহিনী হয়ে বাশার আল আসাদ ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্য আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে একত্রিত করছেন।
হারাস্তার ভূমিধ্বসের পর কি ঘটবেঃ
_______________________________
** হযরত আলী (রাঃ) থেকে বর্নিত, তিনি বলেন, যখন কালো ঝান্ডাবাহী দলের লোকেরা পরস্পর মতানৈক্যে লিপ্ত হবে তখন আরম জনপদের একাংশ ধ্বসে পড়বে এবং তার পশ্চিম পার্শ্বের মসজিদের এক সাইড ধ্বংস হয়ে যাবে। অতঃপর শাম দেশ থেকে তিন প্রকারের ঝান্ডা আত্নপ্রকাশ করবে। আসহাব, আবকা(Tuareg) এবং সুফিয়ানীর ঝান্ডা। সুফিয়ানী বের হবে শাম দেশ থেকে, এক পর্যায়ে সুফিয়ানী সব দলের উপর জয়লাভ করবে।
[ আল ফিতান: নুয়াইম বিন হাম্মাদ - ৮৪১ ]
এই হাদিসটিতে একেবারে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, হারাস্তার ভূমিধ্বসের পরেই আসহাব জাতি, আবকা জাতি ও সুফিয়ানী বাহিনীর উত্থান হবে। তিনটি বাহিনী সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পড়ুনঃ
১, ইসলামিক ইস্টেট কি আসহাব জাতি? তাদের কি পুনরায় উত্থান হবে? তাদের শেষ পরিণতি কি হবে? লিংকঃhttps://islamicastrolgy.blogspot.com/2018/03/blog-post.html?m=1
২, হলুদ পতাকাবাহী বর্বর আবকা জাতি কারা হবে? কিভাবে তাদের উত্থান ও পতন হবে? লিংকঃ https://islamicastrolgy.blogspot.com/2018/01/blog-post.html?m=1
৩, হাদিসে বর্ণিত সুফিয়ানী কে? কারা তার সহযোগী হবে? কবে তার আত্নপ্রকাশ হবে? লিংকঃ https://islamicastrolgy.blogspot.com/2018/01/blog-post_75.html?m=1
তাই যারা আখিরুজ্জামান নিয়ে পড়াশোনা করেন কিংবা ইমাম মাহদীর আবির্ভাবের পূর্ব আলামত সম্পর্কে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন, তাদের জন্য অবশ্যই হারাস্তার ভূমিধ্বসের দিকে নজর রাখতে হবে। অন্যথায়, কিছুতেই ফিতনা সম্পর্কে সচেতন হতে পারবেন না।
Social Plugin